স্পোর্টস ডেস্ক:
ভাগ্য ফেরাতে মরিয়া এমন দুটি দল আজ মুখোমুখি হচ্ছে, আসর শুরুর আগে যাদের গায়ে ফেভারিটের তকমা পরিয়ে দিতে দ্বিধা ছিল না কারোরই। কাগজে-কলমে এবং ধারে-ভারে এগিয়ে থাকলেও মাঠের ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত নেই এর প্রতিফলন। নেই বলেই হিসাবের খাতা এখনো শূন্য বেক্সিমকো ঢাকার। এক ম্যাচ বেশি খেলা জেমকন খুলনা জয় দিয়ে আসর শুরু করলেও টানা দুই হারে তাদেরও ঢাকার মতোই বিধ্বস্ত অবস্থা।
আজ নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ের পর এর একটি হবে আরো বিপর্যস্ত। হয় ঢাকা নয়তো খুলনা। অথচ দলীয় ভারসাম্য, বড় তারকাদের সঙ্গে শীর্ষ ক্রিকেটারদের উপস্থিতি মিলিয়ে সেরা চার দলের দুটির নাম যেন লেখাই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের এই পর্যায়ে এসে দেখা যাচ্ছে একেবারেই উল্টো চিত্র। ঢাকা ও খুলনাকে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে রেখে শীর্ষে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। এই দুই দলকেই রীতিমতো গুঁড়িয়ে দিয়েছে তারা। ঢাকাকে মাত্র ৮৮ রানে অলআউট করে দেওয়া দলটির সামনে আরো অসহায় ছিল খুলনাও। তারা গুটিয়ে গিয়েছিল আরো কমে, ৮৬ রানে।
অল্প রান তাড়ায় দুই ম্যাচেই লিটন কুমার দাস ও সৌম্য সরকারের ওপেনিং জুটি দিয়েছে ৭৩ রানের সূচনা। মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে দারুণ ছন্দে আছেন তাদের স্পিনাররাও। তাই ব্যাটিংয়ে বড় কোনো পরীক্ষায় এখনো পড়তে হয়নি দলটিকে। কে বলতে পারে যে তামিম ইকবালের অধিনায়কোচিত ইনিংসে গত পরশু মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীকে প্রথম হার উপহার দেওয়া ফরচুন গ্রুপ বরিশাল আজ চট্টগ্রামের কঠিন সেই পরীক্ষাটি নেবে না? কাজেই আজকের দুই ম্যাচই দর্শকদের ভিন্নমুখী কৌতূহল নিয়ে অপেক্ষায় রাখছে।
বরিশালের মুখোমুখি হওয়ার আগে চট্টগ্রাম শিবিরে আছে পাওয়া এবং হারানোর গল্পও। মাহমুদুল হাসান ফিরলেন আর মমিনুল হক গেলেন। আসর শুরুর আগে কভিড পজিটিভ হওয়ায় ছিটকে পড়েছিলেন মাহমুদুল। রোগমুক্তির সনদ মিলতেই গত ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বকাপজয়ী বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্য ফিরতে না ফিরতেই গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম আঙুলের চোটে হারিয়ে ফেলল মমিনুলকে। খুলনা ম্যাচে ফিল্ডিংয়ের সময় ডান হাতের চোট পাওয়া বৃদ্ধাঙ্গুলে চিড় ধরা পড়ায় বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক বঙ্গবন্ধু কাপে খেলতেই পারবেন না আর। চট্টগ্রাম দলের ফিজিও এনামুল হকও নিশ্চিত করেছেন তা, ‘চোট থেকে সেরে উঠতে চার থেকে ছয় সপ্তাহ লাগতে পারে মমিনুলের।’ তাতে অবশ্য শুরু থেকেই ছন্দ ধরে ফেলা দলের পক্ষে খুব সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
সমস্যায় বরং তারকাবহুল খুলনাই বেশি আছে। তাদের অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহর কথায় যেন ফুটে ওঠে সে অসহায়ত্বই। ইতিবাচক কিছু খুঁজতে গিয়ে যখন লোয়ার অর্ডারের ব্যাটিং নিয়ে সন্তুষ্টির কথা তাঁকে শোনাতে হয়, তখনই টপ ও মিডল অর্ডারের দৈন্য ফুটে ওঠে, ‘শুরু থেকে আমাদের লোয়ার অর্ডারের ব্যাটিংটাই ভালো হচ্ছে।’ সাকিব, মাহমুদ থেকে শুরু করে ইমরুল ও এনামুল, রান নেই কারো ব্যাটেই। বরিশালের কাছে হারতে থাকা ম্যাচে শেষ ওভারে আরিফুল চারটি ছক্কা মেরে না জেতালে আরো করুণ অবস্থা হতে পারত তাদের। ঢাকার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম অবশ্য প্রথম ম্যাচে রাজশাহীর বিপক্ষে খেলেছিলেন ৪১ রানের ইনিংস। তবে জয় যখন সময়ের অপেক্ষা, তখনই স্কুপ খেলতে গিয়ে আউট হয়ে দলের বিপদের দরজা খুলে যাওয়ার দায়ও তাঁরই। পরের ম্যাচে রানের খাতাই খুলতে না পারা মুশফিকের দলের ব্যাটসম্যানরা সবাই ব্যর্থ। তবে আজ তাদের প্রতিপক্ষেরও একই সমস্যা থেকে বের হওয়ার তাড়না। ব্যাটিং নিয়ে যে ভুগছে আসর শুরুর আগের দুই ফেভারিটই।